পরবর্তী অর্থবছরের জন্য সরকারের অন্য অগ্রাধিকারগুলো হতে পারে করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোর জন্য আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষি পুনর্বাসন ও অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনের জন্য সারে ভর্তুকির ধারাবাহিকতা এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও গ্রামীণ উন্নয়ন।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সম্প্রসারণ, গৃহহীন দরিদ্র মানুষের আবাসন প্রকল্প এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিনামূল্যে বা সর্বনিম্ন মূল্যে খাদ্য বিতরণ অব্যাহত রাখাও ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত বাজেট অধিবেশন সমাপ্ত
এছাড়া শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ সামগ্রিক মানবসম্পদ উন্নয়ন হবে অন্য একটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্প্রতি বাজেট ব্যবস্থাপনা এবং অর্থ ও মুদ্রার বিনিময় হার নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য বাজেটের প্রাথমিক ধারণা নিয়ে ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
‘অবাস্তবায়নযোগ্য’ উল্লেখ করে জাতীয় বাজেট প্রত্যাখ্যান করল বিএনপি
সভায় জিডিপির হার প্রাথমিকভাবে ধরা হয় ৭.৭ শতাংশ, মূল্যস্ফীতির হার ৫.৩ শতাংশ, মোট বিনিয়োগের হার জিডিপির ৩২ শতাংশ (বেসরকারি ২৪.৫ শতাংশ, সরকারি ৭.৫ শতাংশ) এবং মোট রাজস্ব সংগ্রহ ধরা হয় জিডিপির ১০.৮ শতাংশ।
এছাড়া আগামী অর্থবছরে মোট ব্যয় হবে জিডিপির ১৬.৭ শতাংশ, মোট বাজেট ঘাটতি হতে পারে জিডিপির ৫.৮ শতাংশ এবং প্রাথমিক ঘাটতি হতে পারে জিডিপি ৪ শতাংশ। জিডিপির পরিমাণ হবে ৩৫ হাজার ৫২ লাখ ৭৭৮ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলমান কোভিড-১৯ মহামারি এবং এর দ্বিতীয় ঢেউ বিবেচনায় বাজেটের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংসদে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস
অর্থনৈতিক কার্যক্রমগুলোতে পুনরায় গতি ফেরাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে দেশের জিডিপির প্রায় ৪.৩ শতাংশ সমতুল্য ১৪.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।
এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য প্রণোদনা, শ্রমিকদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য তহবিল, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য মূলধন, রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ঋণ সুবিধা, কৃষক এবং কৃষিতে সহায়তা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ঋণ, স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য রি-ফিন্যান্সিং স্কিম এবং বীমা অন্যতম।
প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব কাটাতে তাৎক্ষণিক, সংক্ষিপ্ত এবং দীর্ঘ মেয়াদ ভিত্তিতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকার।
বাজেট উচ্চাভিলাষী, তবে বাস্তবায়ন সম্ভব: প্রধানমন্ত্রী
এর মধ্যে রয়েছে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, আর্থিক প্যাকেজ প্রবর্তন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণ এবং অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি।
সরকারি ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার এবং বিদেশ ভ্রমণ ও বিলাসবহুল ব্যয় নিরুৎসাহিত করা।
দেশের ঋণ-জিডিপি অনুপাত মাত্র ৩৪ শতাংশ থাকায়, সামষ্টিক অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত না করেই অতিরিক্ত সরকারি ব্যয়ের জন্য ঘাটতি বাজেট বহন করতে পারে সরকার।
ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে চালু করা হয় স্বল্পহারের কিছু ঋণ সুবিধাও। এই ঋণের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিক ও কর্মচারীদের নিজ নিজ কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতা অক্ষত রাখা।
দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো পূরণ করতে ও দিনমজুরসহ অনানুষ্ঠানিক খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করে সরকার।
বাজেট বাস্তবায়ন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, বলছেন অর্থনীতিবিদরা
এদিকে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি করতে সিআরআর এবং রেপো হ্রাস করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা চাহিদা অনুযায়ী আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।